ঢাকা ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম :
ব্যারিস্টার কায়সার কামালের উপহার শিক্ষার্থীদের হাঁটতে হলো না আর ঝুঁকির পথ ধরে কলমাকান্দায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত। কলমাকান্দায় ১৬ মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ৩ ধর্মপাশায় টাকার বিনিময়ে বিএনপি’র বিতর্কিত কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন। কলমাকান্দায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত কলমাকান্দায় ভাইকে মৃত দেখিয়ে সম্পত্তি আত্মসাদের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন শোকবার্তা কলমাকান্দায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত নেত্রকোনার কলমাকান্দায় নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে বুধবার দুপুরে র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ধর্মপাশায় সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকিতে থানায় জি ডি। সেলবরষ ইউনিয়ন বিএনপির ১নং ওয়ার্ড সম্মেলন অনুষ্ঠিত,

সাইফুল ইসলাম

বাদশাগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের কোটি টাকার ভবন নির্মাণে অনিয়ম, ফাটল ধরেছে শিক্ষার স্বপ্নে।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের বাদশাগঞ্জ বাজার বালিকা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঁচতলা মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চার কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও এখনও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি, বরং ভবনের গায়ে ধরেছে ফাটল, পিলার বেঁকেছে, গ্রিল বসানো হয়েছে উঁচু-নিচু করে।
২০২৩ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় এই ভবনের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান JV-ME। শুরু থেকেই নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি ধাপের কাজ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে করার কথা থাকলেও কোনো কিছুই জানানো হয়নি।
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট নকশা ও মান বজায় না রেখে পিলার তৈরি করা হয়েছে বাকা করে, বিভিন্ন ভিটির উচ্চতায় অমিল রয়েছে, বাইরে অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে প্লাস্টার। রং করার সময় নিয়ম অনুযায়ী পাথর দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে সিলার লাগানোর কথা থাকলেও তা না করে সিলারের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে চাক পাউডার, যা ভবনের স্থায়িত্বের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা রং মিস্ত্রী সাইফুল ইসলাম এসব অনিয়মের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, দ্রুত কাজ শেষ করার চাপ থাকায় নিয়ম অনুসরণ না করেই সিলারে চাক পাউডার মিশিয়ে রঙের কাজ করা হচ্ছে।
অভিযোগ নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার হোল্ডার মঞ্জু সরকার। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, নির্মাণকাজের বিষয়ে কিছু না জানিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে, যা দুঃখজনক।
সহকারী প্রকৌশলী নাঈম সরজমিনে গিয়ে অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “আমি নিজে গিয়ে সব অনিয়ম দেখেছি। বিষয়টি দপ্তরে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে এলাকাবাসী বলছেন, কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষার জন্য ভবন নির্মাণে এমন অনিয়ম হতাশাজনক। তারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় অভিভাবক ও সচেতন মহলের আশঙ্কা, নিম্নমানের এই ভবন শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তারা চাইছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভবনটিকে নিরাপদ ও মানসম্মত করা হোক।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information
আপডেট সময় : ০৮:০৫:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
১৮১ Time View

আপডেট সময় : ০৮:০৫:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

বাদশাগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের কোটি টাকার ভবন নির্মাণে অনিয়ম, ফাটল ধরেছে শিক্ষার স্বপ্নে।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের বাদশাগঞ্জ বাজার বালিকা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঁচতলা মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চার কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও এখনও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি, বরং ভবনের গায়ে ধরেছে ফাটল, পিলার বেঁকেছে, গ্রিল বসানো হয়েছে উঁচু-নিচু করে।
২০২৩ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় এই ভবনের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান JV-ME। শুরু থেকেই নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি ধাপের কাজ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে করার কথা থাকলেও কোনো কিছুই জানানো হয়নি।
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট নকশা ও মান বজায় না রেখে পিলার তৈরি করা হয়েছে বাকা করে, বিভিন্ন ভিটির উচ্চতায় অমিল রয়েছে, বাইরে অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে প্লাস্টার। রং করার সময় নিয়ম অনুযায়ী পাথর দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে সিলার লাগানোর কথা থাকলেও তা না করে সিলারের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে চাক পাউডার, যা ভবনের স্থায়িত্বের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা রং মিস্ত্রী সাইফুল ইসলাম এসব অনিয়মের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, দ্রুত কাজ শেষ করার চাপ থাকায় নিয়ম অনুসরণ না করেই সিলারে চাক পাউডার মিশিয়ে রঙের কাজ করা হচ্ছে।
অভিযোগ নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার হোল্ডার মঞ্জু সরকার। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, নির্মাণকাজের বিষয়ে কিছু না জানিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে, যা দুঃখজনক।
সহকারী প্রকৌশলী নাঈম সরজমিনে গিয়ে অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “আমি নিজে গিয়ে সব অনিয়ম দেখেছি। বিষয়টি দপ্তরে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে এলাকাবাসী বলছেন, কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষার জন্য ভবন নির্মাণে এমন অনিয়ম হতাশাজনক। তারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় অভিভাবক ও সচেতন মহলের আশঙ্কা, নিম্নমানের এই ভবন শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তারা চাইছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভবনটিকে নিরাপদ ও মানসম্মত করা হোক।