ঢাকা ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম :
ব্যারিস্টার কায়সার কামালের উপহার শিক্ষার্থীদের হাঁটতে হলো না আর ঝুঁকির পথ ধরে কলমাকান্দায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত। কলমাকান্দায় ১৬ মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ৩ ধর্মপাশায় টাকার বিনিময়ে বিএনপি’র বিতর্কিত কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন। কলমাকান্দায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত কলমাকান্দায় ভাইকে মৃত দেখিয়ে সম্পত্তি আত্মসাদের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন শোকবার্তা কলমাকান্দায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত নেত্রকোনার কলমাকান্দায় নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে বুধবার দুপুরে র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ধর্মপাশায় সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকিতে থানায় জি ডি। সেলবরষ ইউনিয়ন বিএনপির ১নং ওয়ার্ড সম্মেলন অনুষ্ঠিত,

শিকলবন্দী শিক্ষার্থী, প্রশ্নবিদ্ধ মাদ্রাসা শিক্ষা পদ্ধতি।

শিকলবন্দী শিক্ষার্থী, প্রশ্নবিদ্ধ মাদ্রাসা শিক্ষা পদ্ধতি।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ মাদ্রাসায়
দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আরাফাত — পিতা হবিকুল, বাড়ি নওধার গ্রামে।

আজ দুপুরে পড়াশোনায় মন না দেওয়ায় এবং ক্লাসে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে তার পায়ে পড়ানো হয় শিকল।

এই শাস্তি দিয়েছেন সহকারী শিক্ষক সাইয়িদ হাসান।
শিকল পরা অবস্থায় ওই শিশুকে পাঠানো হয় তার বাড়িতে — রাতের খাবার আনতে।
কিন্তু ভারি শিকলের জন্য হাটতেই পারছিল না সে। বারবার পড়ে যাচ্ছিল মাঠিতে।
এই মর্মান্তিক দৃশ্য নজরে আসে স্থানীয় সাংবাদিকদের।
আমরা নিজের চোখে দেখেছি ছেলেটা শিকল পরে হাঁটছে, হাটতেই পারছে না। ওর পায়ে দাগ হয়ে গেছে।”
এই মাদ্রাসায় প্রায় ৫০০ ছাত্র-ছাত্রী এবং ২৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন।
একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন—
“যিনি শিকল পরিয়েছেন, তার ব্যবহার আগেও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। এটা প্রথম না।”

মাদ্রাসার মোহতামিম মুফতি আশরাফ আলী প্রথমে ঘটনাটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন,
সাংবাদিকদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেননি।
পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে জানান, এটি “তার অগোচরে ঘটেছে”।
আমাদের অনেককে আগেও শিকল পরানো হইছে, কেউ কিছু বলে না।”

শিক্ষা কি তবে ভয় আর শাস্তির নাম?
এই বয়সে শিশুরা ভালোবাসা আর যত্ন চায়।
কিন্তু শিকল দিয়ে মনোযোগ ফেরানোর এই প্রক্রিয়া কি আদৌ গ্রহনযোগ্য কি?

শিশুদের প্রতি এমন অমানবিকতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
এটি শুধু একটি শিশুর উপর নিষ্ঠুরতা নয়, পুরো সমাজের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি চরম আঘাত।
প্রশাসনের উচিত—এই ঘটনায় তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
না হলে আরও অনেক “আরাফাত” এর শৈশব হারিয়ে যাবে শিকলের শব্দে।এ  ব্যাপারে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনি রায় জানান অবশ্যই তদন্ত করে দোষীদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

শাকিন শাহ
১৯-০৬-২০২৫image0.jpegimage1.png

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information
আপডেট সময় : ১০:৫৬:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
৩০৪ Time View

শিকলবন্দী শিক্ষার্থী, প্রশ্নবিদ্ধ মাদ্রাসা শিক্ষা পদ্ধতি।

আপডেট সময় : ১০:৫৬:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

শিকলবন্দী শিক্ষার্থী, প্রশ্নবিদ্ধ মাদ্রাসা শিক্ষা পদ্ধতি।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ মাদ্রাসায়
দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আরাফাত — পিতা হবিকুল, বাড়ি নওধার গ্রামে।

আজ দুপুরে পড়াশোনায় মন না দেওয়ায় এবং ক্লাসে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে তার পায়ে পড়ানো হয় শিকল।

এই শাস্তি দিয়েছেন সহকারী শিক্ষক সাইয়িদ হাসান।
শিকল পরা অবস্থায় ওই শিশুকে পাঠানো হয় তার বাড়িতে — রাতের খাবার আনতে।
কিন্তু ভারি শিকলের জন্য হাটতেই পারছিল না সে। বারবার পড়ে যাচ্ছিল মাঠিতে।
এই মর্মান্তিক দৃশ্য নজরে আসে স্থানীয় সাংবাদিকদের।
আমরা নিজের চোখে দেখেছি ছেলেটা শিকল পরে হাঁটছে, হাটতেই পারছে না। ওর পায়ে দাগ হয়ে গেছে।”
এই মাদ্রাসায় প্রায় ৫০০ ছাত্র-ছাত্রী এবং ২৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন।
একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন—
“যিনি শিকল পরিয়েছেন, তার ব্যবহার আগেও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। এটা প্রথম না।”

মাদ্রাসার মোহতামিম মুফতি আশরাফ আলী প্রথমে ঘটনাটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন,
সাংবাদিকদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেননি।
পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে জানান, এটি “তার অগোচরে ঘটেছে”।
আমাদের অনেককে আগেও শিকল পরানো হইছে, কেউ কিছু বলে না।”

শিক্ষা কি তবে ভয় আর শাস্তির নাম?
এই বয়সে শিশুরা ভালোবাসা আর যত্ন চায়।
কিন্তু শিকল দিয়ে মনোযোগ ফেরানোর এই প্রক্রিয়া কি আদৌ গ্রহনযোগ্য কি?

শিশুদের প্রতি এমন অমানবিকতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
এটি শুধু একটি শিশুর উপর নিষ্ঠুরতা নয়, পুরো সমাজের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি চরম আঘাত।
প্রশাসনের উচিত—এই ঘটনায় তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
না হলে আরও অনেক “আরাফাত” এর শৈশব হারিয়ে যাবে শিকলের শব্দে।এ  ব্যাপারে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনি রায় জানান অবশ্যই তদন্ত করে দোষীদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

শাকিন শাহ
১৯-০৬-২০২৫image0.jpegimage1.png